প্রকাশিত: ৩০/০৩/২০১৮ ১০:২৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৪৮ এএম

নড়াইলের কালিয়ায় প্রায় আট হাজার গ্রাহকের ৫০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামের একটি এনজিও। অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাহকরা কালিয়া পৌর শহরে চলন্তিকার অফিস ঘেরাও করলে পুলিশ তাদের তাড়িয়ে দেয়।

ওই অফিসে আটকা পড়া প্রতারকরা পালিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনজিওর অফিসটি সিলগালা করে দিয়েছেন ইউএনও। প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতারকরা অফিস থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি এখন উপজেলা জুড়ে আলোড়ন তুলেছে।

গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেছেন, চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামের খুলনা ভিত্তিক একটি এনজিও ২০০৮ সালে কালিয়া পৌর শহরে অফিস ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করে। ব্যাংকের আদলে ৬ বছরে দ্বিগুন ও ১০ বছরে তিনগুণ মুনাফা দেয়ার ঘোষনা দিয়ে উপজেলা জুড়ে মেয়াদী আমানত, মাসিক আমানত সংগ্রহ ও ঋণ দান কর্মসূচী শুরু করে।

অধিক মুনাফার আশায় গ্রাহকরা গত ১০ বছরে সেখানে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মেয়াদী আমানত করেছেন। প্রথম দিকে গ্রাহকদের মধ্যে নাম মাত্র কিছু ঋণ দিলেও আমানতের টাকা ফেরত চেয়ে পাননি তারা। অনেকের আমানতের মেয়াদ উর্ত্তীর্ন হলেও আমানতের টাকা তুলতে গেলে এনজিও কর্মকর্তারা সংস্থার নিয়ম পালনের অজুহাত দেয়।



আমানতকারিরা টাকা ফেরত নিতে চাইলেও তাদের টাকা ফেরত না দিয়ে সংশ্লিষ্টরা নানা তালবাহানা করতে থাকে। এরই মধ্যে গত বুধবার রাতে ওই বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়ে চলন্তিকার ম্যানেজারের পালিয়ে যাওয়ার খবর গ্রাহকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

আজ সকাল ১১ টার দিকে শতাধিক আমানতকারি ওই এনজিরও কালিয়া অফিস ঘেরাও করে। সেখানে প্রধান হিসাবরক্ষক ভজন কুমার দাশ সহ কয়েক জন কর্মচারি আটকা পড়েন। এনজিও কর্মীদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন বলে ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করে। পালিয়ে যাওয়ার পর ওইদিন সন্ধ্যায় কালিয়ার ইউএনও অফিসটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এদিকে চলন্তিকা যুব সোসাইটির কালিয়া অফিসের ম্যানেজার মিলন কুমার দাশের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, গত জানুয়ারী মাস থেকে এমডি সরোয়ার হোসাইন ও চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামান কালিয়ার প্রায় ৮ হাজার গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। যে কারনে তারা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারেনি। গ্রাহকদের ক্ষোভ থেকে বাঁচাতে কালিয়া থানা পুলিশ এনজিও কর্মীদের নিরাপত্তা দেয় ও সন্ধ্যায় অফিসটি সিলগালা দেয়।

চলন্তিকার চেয়ারম্যান মো. খবিরুজ্জামানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

কালিয়া থানার ওসি শেখ শমশের আলী গ্রাহকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, চলন্তিকার অফিস ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ম্যানেজার মিলনের সাথে মোবাইলে কথা বলেছেন। ম্যানেজার গ্রাহকদের অভিযোগ গুজব বলে দাবি করায় এবং আমানতকারিদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য টাকা আনতে তিনি খুলনায় প্রধান কার্যালয়ে রয়েছেন বলে জানানোর কারনে তিনি গ্রাহকদের সরিয়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যায় অফিসটি সিলগালা করা হয়েছে। কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



কালিয়ার ইউএনও মো. নাজমুল হুদা বলেছেন, তিনি ঘটনার খবর পেয়ে প্রতারকদের ধরতে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের সুবিধার জন্য অফিসটি সিলগালা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...